ভারতে দারিদ্র্যতা (Poverty in India) ভারতে দারিদ্র্য বজায় থাকার কারণ (Causes of persistance of poverty in India) ভারতের দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচি (Poverty alleviation programs in India)
ভারতে দারিদ্র্যতা (Poverty in India)
বেঁচে থাকার জন্য একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে কিছু পরিমাণ দ্রব্য সামগ্রী ভোগ করতে হবে। যে সমস্ত দ্রব্যসামগ্রী ভোগ করে কোন একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি দৈনিক 2250 ক্যালোরি পেতে পারে সেই পরিমাণ দ্রব্যসামগ্রীকে দারিদ্র্যের নিম্নতম মান হিসেবে ধরা হয়। বাজার থেকে এই সমস্ত দ্রব্য সামগ্রী কিনতে যা খরচ লাগে, টাকার অংকে সেটাই হলো নিম্নতম ভোগ ব্যয় এবং টাকার অঙ্কে এটাই হল দারিদ্র্য সীমার সংজ্ঞা। যে সমস্ত ব্যক্তি এই পরিমাণ ভোগ ব্যয় করতে পারে না তাদেরই আমরা বলি দরিদ্র।
ভারতের পরিকল্পনা কমিশনের মতে 1960 থেকে 61 সালের মূল্যস্তর অনুযায়ী যেসব ব্যক্তির মাসিক ভোগ ব্যয় কুড়ি টাকার কম তারাই দারিদ্র্যসীমার নিচে আর যেসব ব্যক্তির মাসিক ভোগব্যয় কুড়ি টাকার অথবা তারও বেশি তারায দারিদ্র্যসীমার উপরে।এই হিসাবটি নিম্নতম মান অর্থাৎ 2250 ক্যালোরি সংগ্রহ করার জন্য যে ভোগ্যদ্রব্য ভোগ করতে হবে সেই হিসাব ধরেই করা হয়েছে।
ক্যালরির মাধ্যমে দারিদ্র্য পরিমাপকে জৈবিক দৃষ্টিভঙ্গি বলা হয়। অনেকেই এই দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করেন না। তাদের বক্তব্য বিভিন্ন অঞ্চলের লোকেদের ক্যালোরির প্রয়োজন এক রকম নয়।তাছাড়া খাদ্যদ্রব্য ছাড়া এমনও অনেক জিনিস আছে যেগুলি জীবনধারনের ন্যূনতম প্রয়োজনের অন্তর্গত। সেগুলি এই দৃষ্টিভঙ্গিতে ধরা হয়নি।
ভারতে দারিদ্র্য বজায় থাকার কারণ
(Causes of persistance of poverty in India)
বিভিন্ন কারণে ভারতে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সত্ত্বেও দারিদ্র্য দূরীভূত করা সম্ভব হয়নি। সেগুলি হল-
বেকারত্ব
দারিদ্র্যের প্রধান কারণ বেকারত্ব। ভারতের মতো স্বল্প উন্নত দেশে বেকার সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে এবং এই বেকার সমস্যাই দারিদ্র্যের প্রধান কারণ। সরকার পরিকল্পনার প্রথম দিকে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য কোন প্রত্যক্ষ কর্মসূচি গ্রহণ করেননি। আগে মনে করা হতো যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করলে জাতীয় আয় বৃদ্ধি পাবে এবং তার সাথে সাথে দারিদ্র্যের সমস্যা ও দূর হবে । কিন্তু অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে জাতীয় আয়ের বৃদ্ধির সাথে সাথে দারিদ্র্য দূর হচ্ছে না বরঞ্চ দারিদ্ররেখার নিচে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মুদ্রাস্ফীতি
অপর একটি বিষয় দারিদ্র্যের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে সেটি হল ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ।দাম স্তর ক্রমাগত বাড়তে থাকায় জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা কমে আসছে। নিম্ন আয়ের ব্যক্তিদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে এবং দারিদ্র্যসীমার নিচে জনসংখ্যার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি
জনসংখ্যা বৃদ্ধিকেও দারিদ্র্যের আরেকটি কারণ হিসেবে ধরা দিতে পারে। ভারতের জাতীয় আয় পরিকল্পনাকালে বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু তার সাথে সাথে জনসংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। তার ফলে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে খুবই সামান্য। এই জন্য দারিদ্র্যতা রয়ে গেছে।
শিল্পরগ্নতা
শিল্পক্ষেত্রে রুগ্নতা ও দারিদ্র্যের সমস্যার জন্য দায়ী শিল্পক্ষেত্রে রুগ্নতার জন্য শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। এর ফলে বেকার সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করছে এবং দারিদ্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ত্রুটিপূর্ণ কর ব্যবস্থা
ভারতের কর রাজস্বের বিরাট অংশ সংগ্রহ হয় পরোক্ষ কর থেকে। যার বোঝা মূলত বহন করে দেশের দরিদ্র জনসাধারণ ।ফলে দরিদ্র ব্যক্তিদের দারিদ্র্য আরও বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
সরকারি ক্ষেত্রে ব্যর্থতা
ভারতের নিদারুন দারিদ্র্যের আরেকটি কারণ হল সরকারি ক্ষেত্রের ব্যর্থতা ।ভারতের সরকারি ক্ষতির পরিমাণই বেশি। অপরদিকে সরকারি ক্ষেত্রে এই ব্যর্থতার সুযোগ নিয়েছে বেসরকারি ক্ষেত্র।বেসরকারি ক্ষেত্র গুলির জনস্বার্থে বিরোধী আচরণ ও দারিদ্র্যের জন্য অনেকাংশ দায়ী ।ভারতের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের অসংযত লোভ, কর ফাঁকি, ব্যাপক ভেজাল, ফাটকা কারবারি, দারিদ্র্যের সমস্যা কে ভয়াবহ করে তুলেছে।
ভারতের দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচি
(Poverty alleviation programs in India)
ভারতে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য প্রথম চারটি পরিকল্পনায় বিশেষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। কারণ পরিকল্পনাগুলিতে মনে করা হয়েছিল যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে দরিদ্র জনসংখ্যার পরিমাণ কমে আসবে এবং দারিদ্রতা হ্রাস পাবে। কিন্তু অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে প্রতিটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দরিদ্র জনসংখ্যার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। সেই জন্য পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা থেকে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য বিশেষ কতকগুলি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। 1971 সালের সংসদীয় নির্বাচনের আগে 'গরিবি হটাও' স্লোগান দেওয়া হয় এবং সেই সময় পঞ্চম পরিকল্পনা তে সর্বপ্রথম দারিদ্র্যের কারণ নির্ধারণ এবং দারিদ্র দূরীকরণের জন্য নির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।পঞ্চম পরিকল্পনার সময়ে দেশে দরিদ্র লোকেদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য নূন্যতম প্রয়োজন পূরণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পের মধ্যে ছিল প্রাথমিক শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য ,গ্রামাঞ্চলের চিকিৎসা সুযোগ, পুষ্টি বৃদ্ধির সমস্যা, বস্তি উন্নয়ন, গ্রামের রাস্তা উন্নয়ন প্রভৃতি।
পঞ্চম পরিকল্পনা থেকে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য লক্ষ্য ভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি গুলি আলোচনা করা হলো।
Integrated rural development program (IRDP)
গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র দূর করার জন্য ১৯৬৭ থেকে ৭৭ সালে সুসংহত গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মসূচি চালু করা হয়। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল ঋণ ও ভর্তুকির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্রতম পরিবারগুলিকে সাহায্য করা। এই কর্মসূচির কৌশল হল গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র ব্যক্তিদের আয় সৃষ্টিকারী সম্পদের মাধ্যমে স্বনিযুক্তির ব্যবস্থা করা।
National Rural Employment programme(NREP)
গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র দূর করার জন্য 1980 সালে জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান কর্মসূচি চালু করা হয় ।এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র জনসাধারণের মজুরী ভিত্তিক অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। এর সঙ্গে স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টির ব্যবস্থা করা এবং গ্রামাঞ্চলে জনসাধারণের জীবন যাপনের গুণগত মানের উন্নতি ঘটানো ।প্রকৃতপক্ষে বনসম্পদ, মৃত্তিকা সংরক্ষণ ব্যবস্থা, তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য নির্মাণ কাজ, বিদ্যালয়, রাস্তাঘাট, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি ছিল ওই কর্মসূচির কৌশলগত দিক।
Scheme for self employment to the educated urban youth (SEEUY)
শহরাঞ্চলের দারিদ্র দূর করার জন্য 1983 থেকে 84 সালে শহরের শিক্ষিত যুবকদের জন্য
স্বনিয়োজিত কর্মসংস্থান প্রকল্প চালু করা হয়।এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ঋণ ও ভর্তুকির সাহায্যে শহরাঞ্চলের শিক্ষিত যুবকদের স্ব -নিয়োজিত কর্মসংস্থানে উৎসাহ দেওয়া। এই প্রকল্পে ঠিক করা হয় ব্যাংক শিক্ষিত যুবকদের যে পরিমাণ ঋণ দেবে তার 25 শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার ভর্তুকি হিসেবে দিয়ে থাকবে।
Jawahar Rojgar Yojana (JRY)
গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র দূর করার জন্য NREP ও RLEGP এই দুটি প্রকল্পের সংযুক্তি ঘটিয়ে 1989 সালে জওহর রোজগার যোজনা নামে একটি গ্রামীণ কর্মসূচি শুরু করা হয়। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল গ্রামাঞ্চলের বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ব্যক্তিদের সুযোগ-সুবিধার দেওয়ার উদ্দেশ্যে উৎপাদনশীল সামাজিক সম্পদ সৃষ্টি ও জীবনের গুণগত মান উন্নয়ন।
Swarna Jayanti shohure Rojgar Yojana (SJSRY) .
শহরাঞ্চলে দারিদ্র দূর করার জন্য 1997 সালের স্বর্ণ জয়ন্তী শহুরে রোজগার যোজনা প্রবর্তিত হয়। প্রকল্পের পূর্বে প্রচলিত তিনটি প্রকল্প নেহেরু রোজগার যোজনা,শহরের দরিদ্রদের জন্য প্রাথমিক পরিসেবা এবং প্রধানমন্ত্রীর সুসংহত শহরাঞ্চলের দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্প একত্রিত করা হয়। এই কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল শহরাঞ্চলের বেকার ও অর্ধ বেকারদের জন্য এবং নবম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্যস্ব নিয়োজিত কর্মসংস্থান বা মজুরী ভিত্তিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
Swarna Jayanti gram swarojgar Yojana (SGSY)
গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র দূর করার জন্য 1999 সালে স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা প্রবর্তন করা হয়।এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে, সুসংহত গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মসূচি (IRDP), গ্রামাঞ্চলে যুবকদের স্বনিয়োজিত কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ (TRYSEM) , গ্রামাঞ্চলে মহিলা ও শিশুদের অবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রকল্প(DWCRA) এবং 10 লক্ষ কূপ খনন প্রকল্প (MWS) ।এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ব্যাংক ঋণ ও সরকারি ভর্তুকির সাহায্যে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী গ্রামাঞ্চলের পরিবারগুলিকে সাহায্য প্রদান।
INDIRA AWAAS YOJANA (IAY)
গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র দূরীকরণের উদ্দেশ্যে 1999 থেকে 2000 সালে ইন্দিরা আবাস যোজনা চালু করা হয়। এই যোজনার উদ্দেশ্য হল গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র জনসাধারণের গৃহ সমস্যার সমাধানের জন্য বিনা ব্যয়ে দরিদ্র মানুষকে গৃহ প্রদান করা।
PRADHAN MANTRI GRAMODYA YOJANA(PMGY)
গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য 1999 থেকে 2000 সালে প্রধানমন্ত্রী গ্রামোদয় যোজনা চালু করা হয়। উদ্দেশ্য হল গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী জনসাধারণের মান উন্নয়ন অর্জন করার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা ,গ্রামীন বাসস্থান, গ্রামীণ পানীয় জল সরবরাহ, পুষ্টি এবং গ্রামীন বৈদ্যুতিকরণ। এই ছয়টি ক্ষেত্রের উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্য করে থাকে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে।
The National Rural Employment Guarantee scheme (NREGS)
গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য 2006 সালে জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্প প্রবর্তন করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে সর্বাপেক্ষা অনগ্রসর 200 টি জেলায় এই প্রকল্প চালু করা হয়। পরবর্তীকালে 2007 থেকে 2008 সালের মধ্যে এই প্রকল্প 330 টি জেলায় সম্প্রসারিত করা হয়। 2008 থেকে 2009 সালে এই প্রকল্প সমস্ত গ্রামীণ জেলাগুলিতেই সম্প্রসারিত করা হয়েছে।
Mahatma Gandhi National Rural Employment Guarantee scheme (MGNREGS)
এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র জনসাধারণের পরিবারগুলির জীবিকার নিশ্চয়তার জন্য প্রতিটি দরিদ্র পরিবারকে প্রতিবছর কমপক্ষে 100 দিনের মজুরীভিত্তিক কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়। যার সাবালক সদস্য স্বেচ্ছায় অদক্ষ শ্রমিকের পরিশ্রম করতে ইচ্ছুক। 2006 সালে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচিত 200 টি জেলায় প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্প চালু করা হয়। 2008 সালের এপ্রিল মাস থেকে এই প্রকল্প সমগ্র দেশে কার্যকর করা হয়।
ভারতে দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য গৃহীত সরকারি নীতির মূল্যায়ন।
Evaluation of the poverty eradication policy adopted by the government in India.
পরিকল্পনার প্রথম যুগে চতুর্থ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা(1969-1974) পর্যন্ত পরিকল্পনা কমিশন ও সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণের নীতি গ্রহণ করে। পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকীপরিকল্পনা থেকে এই নীতির পরিবর্তন করে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য বিশেষ কতগুলি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং দারিদ্র দূরীকরণের জন্য লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় ।এই কর্মসূচির প্রচেষ্টা সংখ্যাগত ভাবে কিন্তু কম নয় এবং এই সমস্ত প্রচেষ্টার উদ্দেশ্য খুবই মহৎ এবং সরকার কর্তৃক দারিদ্র দূরীকরণের ব্যবস্থা গুলোর কোন সুফল ই দরিদ্ররা পায় না একথা বলা যায় না।কিছু উদ্দেশ্য সফল হয়েছে কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা নগণ্য। প্রকৃতপক্ষে ভারতে দারিদ্র দূরীকরণের কর্মসূচি যে সম্পূর্ণভাবে সফল হয়নি তা ভারতের দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনসংখ্যার হিসাব থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়। ভারতে দারিদ্র দূরীকরণের কর্মসূচিতে সফল হয়নি তা প্রমাণ পাওয়া যায় ইন্দিরা গান্ধী উন্নয়ন গবেষণা সংস্থার একটি রিপোর্টে। রিপোর্টে বলা হয় আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতে তিনজনের মধ্যে একজন গরীব এবং দুজন অপুষ্টিতে ভোগে যদি এর সঙ্গে যারা বিশুদ্ধ পানীয় জল পায় না, যাদের মাথার উপর ছাদ নেই, পরনে কাপড় জোটে না তাদের কথা ধরি তবে দারিদ্র্যের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পায়।